অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায়

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় অতিরিক্ত ঘাম একটি অস্বস্তিকর সমস্যা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে হতে পারে বিশেষ করে হাত, পা, মুখ, বগল ও পিঠে। অনেক সময় আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও অতিরিক্ত ঘাম হতে দেখা যায়। 

এর পিছনে থাকতে পারে মানসিক চাপ হরমোনের পরিবর্তন। অতিরিক্ত উত্তেজনা বা শারীরিক কোন সমস্যা। নিচে অতিরিক্ত ঘাম কমানোর জন্য কিছু কার্যকর এবং সহজ ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো। 

পেজসূচিপত্র: অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় .

বেকিং সোডা ব্যবহার 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় বেকিং সোডা একটি প্রাকৃতিক অ্যালকালাইন উপাদান যা ঘামের অম্লতা শোষণ করে এবং দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে। এটি প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবেও কাজ করে। 

ব্যবহার পদ্ধতি 

  • এক চা চামচ বেকিং সোডা এবং এক চা চামচ পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। 
  • এই মিশ্রণটি বগল বা ঘামে আক্রান্ত স্থানে লাগান। 
  • ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
  • সপ্তাহে তিন চার বার ব্যবহার করতে পারেন। 

আপেল সিডার ভিনেগার 

আপেল সিডার ভিনেগার শরীরের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ঘাম গ্রন্থিকে সংকুচিত করে ঘামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। 

আরো পড়ুন: সকালে খালি পেটে মধু ও লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা

ব্যবহার পদ্ধতি 

  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি ও এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন। 
  • ঘামে আক্রান্ত স্থানে তুলা দিয়ে সরাসরি ভিনেগার লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। 

লেবু ও ব্রেকিং সোডার মিশ্রণ। 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় লেবুর রস অ্যান্টিসেপটিক ও ডিওডোরাইজিং বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ । এটি ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে এবং ঘাম কমায়। 

ব্যবহার পদ্ধতি 

  • এক চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। 
  • বগল বা পায়ে লাগিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। 
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 
  • সপ্তাহে দুই তিন দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। 

চা পাতা বা ব্লাক টি 

চায়ের পাতায় উপস্থিতি ট্যানিন নামক উপাদানটি ছিদ্র সংকুচিত করে ঘ্রাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ত্বকের উপরিভাগকে শুকনো রাখতেও সহায়ক। 

 ব্যবহার পদ্ধতি 

  • ২-৩ ব্লাক টি ব্যাগ ফুটন্ত পানিতে দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। 
  • ঠান্ডা করে ব্যাগগুলো ঘামে আক্রান্ত স্থানে ৫-১০ মিনিট চেপে ধরে রাখুন। 
  • চাইলে এই পানিতে একটি তোয়ালে ডুবিয়ে পুরো শরীর মুছতে পারেন। 

নারকেল তেলের ব্যবহার

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় নারকেল তেলে থাকা লরির এসিড ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ত্বকে প্রাকৃতিক সুবাষ যোগ করে। 

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থার জন্য তরমুজ খাওয়া ভাল জেনে নিন

ব্যবহার পদ্ধতি। 

  • গোসলের পরে বা রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য নারকেল তেল বগল বা হাতে পায়ে লাগান। 
  • প্রতিদিন এটি ব্যবহার করলে ঘাম ও দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

কর্নস্টার্চ বা ট্যালকম পাউডার 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় এই উপাদানগুলো ঘামের আদ্রতা শোষণ করে শরীরকে শুকনো রাখতে সাহায্য করে। 

ব্যবহার পদ্ধতি 

  • পরিষ্কার এবং শুকনো তোকে কর্নস্টার্চ ছিটিয়ে দিন। 
  • বিশেষ করে বগল পায়ের তালু ও হাতের তালুতে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। 
  • বাইরে যাওয়ার আগে ব্যবহার করলে সারাদিনের জন্য স্বস্তি মিলবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন 

শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য পানি অত্যন্ত জরুরি। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত ঘাম প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

পরামর্শ 

  • দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। 
  • গরমে ঠান্ডা পানি ও ফলের রস গ্রহণ করুন। 

খাদ্যাভেসে পরিবর্তন 

ঘাম উপাদানের একটি বড় কারণ আমাদের খাদ্য। অতিরিক্ত মসলা ক্যাফেইন বা ফাস্টফুড ঘাম বাড়াতে পারে। 

সতর্ক থাকুন 

  • ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। 
  • ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল গ্রহণ কমানো। 
  • শাক সবজি ও তাজা ফলমূল বেশি খান। 

তুলার কাপড় পরিধান করুন 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় সিন্থেটিক বা নাইলনের কাপড়ে ত্বক ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারেনা ফলে ঘাম জমে দুর্গন্ধ হয়। তুলার কাপড় ঘাম শোষণ করে আরাম দেয়।

আরো পড়ুন: কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন $500 আয় করা যায়

পরামর্শ 

  • ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের তুলার পোশাক পড়ুন। 
  • প্রতিদিন পোশাক পরিবর্তন করুন ও পরিষ্কার রাখুন। 

মানসিক চাপ কমান 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় চাপ বা দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাম বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে মানসিক প্রশান্তি খুব জরুরী। 

 উপায় 

  • যোগব্যায়াম মেডিটেশন বা ধ্যান করুন। 
  • পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নিন। 
  • মন ভালো রাখার চেষ্টা করুন। 

শেষ কথা 

অতিরিক্ত ঘাম দূর করার ঘরোয়া উপায় অতিরিক্ত ঘাম অস্বস্তিকর হলেও এটি অনেক সময় সাধারণ ও সাময়িক সমস্যা। ঘরোয়া প্রতিকার এবং কিছু দৈনন্দিন পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে এসব পদ্ধতি দীর্ঘ মেয়াদে কাজে না এলে বা খুবই বেশি ঘাম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url