অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয়

অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় আমাদের শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপের একটি অংশ হল গ্যাস উৎপাদন। প্রতিদিন খাবার হজমের সময় কিছু গ্যাস উৎপন্ন হয় যা শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তবে যখন এই গ্যাস মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় তখন তা অস্বস্তি পেট ফাঁপা পেট ব্যথা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। 
 
অতিরিক্ত গ্যাস সমস্যার পেছনে কারণ প্রতিকার ও প্রতিরোধের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে যা মেনে চললে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। 

পেজসূচিপত্র: অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় .

অতিরিক্ত গ্যাসের কারণ 

অতিরিক্ত বাতাস গেলা দ্রুত খাওয়া বেশি কথা বলা বা চুইংগাম খাওয়ার ফলেও বাড়তি বাতাস পেটে চলে যেতে পারে। 
 
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় পাচন সমস্যা কিছু খাবার যেমন ডাল বাঁধাকপি মুলা আলু ইত্যাদি হজম হতে সময় নেয় এবং বেশি গ্যাস তৈরি করে।
 
 
এলার্জি বা অসহিষ্ণুতা দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে। 
 
অতিরিক্ত চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি গ্রহণ কিছু মিষ্টি জাত খাবারের থাকা ফরুক্টোজ সরবিটল হজমে সমস্যা তৈরি করে। 
 
আন্ত্রিক সমস্যা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক আলসারের মতো সমস্যা থাকলেও গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায়।

অতিরিক্ত গ্যাসের লক্ষণ 

  • পেট ফুলে যাওয়া।
  • পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি।
  • বারবার ঢেকুর উঠা।
  • পায়ু পথ দিয়ে বেশি গ্যাস নির্গত হওয়া ।
  • খুদা মান্দা বা খাবার খেতে অরুচি। 

অতিরিক্ত গ্যাসের তাৎক্ষণিক করণীয় 

অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় পানিও গ্রহণ এক গ্লাস গোসল গরম পানি পান করুন এতে হজম তরম্বিত হয় এবং গ্যাস কমে। 
 
হালকা হাঁটা খাবারের পর অন্তত ১৫-২০ মিনিট হালকা হাটাহাটি করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া গতিশীল করে এবং গ্যাস কমাতে সহায়ক।
 
পেট ম্যাসাজ পেটের উপর আলতো করে হাত দিয়ে গোল গোল করে ঘোরানোর মাধ্যমে মাসাজ করলে গ্যাস নির্গত হতে সহায়তা হয়। 
 
উষ্ণ সেক গরম পানির ব্যাগ বা উষ্ণ তোয়ালে দিয়ে পেটে সেক দিলে ব্যথা এবং গ্যাসের অস্বস্তি হ্রাস পায়। 
 
যোগব্যায়াম ছবি শেষ যোগব্যায়াম যেমন পবনমুক্তাসন বা অর্ধমত চন্দ্র সং গ্যাস নির্গমনে সাহায্য করে। 

ঘরোয়া চিকিৎসা 

আদার মধ্যে থাকা এনজাইম হজমে সহায়তা করে এবং গ্যাস কমায় এক কাপ আদা চা পান করতে পারেন। 
 
পুদিনা পাতা পুদিনা গ্যাস দূর করতে খুবই কার্যকর। পুদিনা যা বা পুদিনাপাতা রস পান করা যেতে পারে। 
চিনির সাথে কালোজিরা অল্প পরিমাণ কালোজিরার গুড়া করে মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে গ্যাস কমে যায়। 
 
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় হিং পেটের গ্যাস সমস্যা দূর করে। এই গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে উপকার মিলে। 
 
জিরা ও মুড়ি মরি জিরা ও মরি দিয়ে তৈরি চা হজম শক্তি বাড়ায় এবং পেটের বাবা। 

খাদ্য ভেসে পরিবর্তন 

গ্যাস উৎপাদক খাবার এড়িয়ে চলা বাঁধাকপি, ব্রকলি, কাঁচা, পেঁয়াজ, ডাল মটরশুটি ইত্যাদি কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
 
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় ধীরে ধীরে খাওয়া তাড়াহুড়া করে খেলে বেশি বাতাস গিলে ফেলি। ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবার খান। 
 
 
কম চিনি ও কৃত্রিম মিষ্টি খাওয়া পূরক এবং ফরুক্টোজ সরবিটল জাতীয় কৃত্রিম মিষ্টি খাবার কমান। 
 
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আঁশ যুক্ত খাবার হজমে সাহায্য করে তবে খুব বেশি আঁশ হঠাৎ করে চলে গ্যাস বাড়তে পারে তাই ধীরে ধীরে পরিমাণ মতো বাড়ানো উচিত। 
 
পানি পান পর্যাপ্ত পানি পান করুন যাতে হজম প্রক্রিয়া ঠিক থাকে। 

জীবন যাপনে পরিবর্তন 

নিয়মিত ব্যায়াম প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলে হজম ভালো হয় এবং গ্যাসের সমস্যা কমে 

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ মানসিক চাপ হজম প্রক্রিয়াকে ব্যহৃত করে মেডিটেশন বা শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। 
 
অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার এগুলো হজম সমস্যা বাড়ায় এবং গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। 
 
নিয়মিত সময় খাওয়া দৈনিক নির্দিষ্ট সময় খাবার খেলে হজমের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে। 

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী 

যদিও গ্যাসের সাথে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 
  • পেটে তীব্র ব্যথা। 
  • রক্ত মিশ্রিত পায়খানা। 
  • বমি হওয়া। 
  • ওজন দ্রুত কমে যাওয়া। 
  • দীর্ঘদিন ধরে চলমান গ্যাসের সমস্যা। 
  • জ্বর বা অন্য কোন সংক্রমণের লক্ষণ। 

ওষুধ ব্যবস্থাপনা 

অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় বাজারে কিছু গ্যাস নিরোধক ওষুধ পাওয়া যায় যেমন। 
  • সিমেথিকোন জাতীয় ওষুধ। 
  • অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ। 
  • প্রবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট।
 

তবে যে কোন ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ। জরুরী। 

শেষ কথা 

অতিরিক্ত গ্যাস হলে কি করনীয় অতিরিক্ত গ্যাস যদিও খুব সাধারণ সমস্যা তবুও এটি জীবনযাত্রাকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক খাদ্যভ্যাস নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ কমানো এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের মাধ্যমে সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। যদিও ঘরোয়া পদ্ধতিতে সমাধান না হয় বা গুরুতরো লক্ষণ দেখা দেয় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করায় ভালো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url