কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা প্রতি বছর জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহার দিন আদায় করা হয়। এটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর ত্যাগের স্মরণে মুসলিম উম্মা পালন করে থাকে। 
 
কোরবানি শুধু পশু জবাই নয় বরং এর মধ্যে লুকিয়ে আছে আত্মত্যাগ সহমর্মিতা এবং সামাজিক ন্যায় বিচারের এক মহান শিক্ষা। আর এই কোরবানির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মাংসের সঠিক ও নাজ্য বন্টন। কোরবানির মাংস বন্টনের সঠিক নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেজসূচিপত্র: কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম .

কোরবানির মাংস বন্টনের ইসলামী নিয়ম 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম কোরবানির পশু জবাই করার পর এর গোশত তিন ভাগে ভাগ করার বিধান দেওয়া হয়েছে এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ। সেই অনুযায়ী কোরবানির গোশত তিন ভাগে বন্টন করা উত্তম। 
 
এক ভাগ গরিব ও মিসকিনদের জন্য সদকা সমাজের দরিদ্র অসহায় ও মিসকীনদের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। কোরবানির মূল উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির পাশাপাশি সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির পরিবেশ তৈরি করা। যারা কোরবানি করতে পারে না তাদের মাঝে এই মাংস বিতরণ করে তাদের কে আনন্দে শামিল করা উত্তম। 
 
এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের জন্য হাদিয়া ইসলাম আত্মীয়তার বন্ধনকে গুরুত্ব দেয় আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী ও বন্ধুদের মাঝে কোরবানির মাংস উপহার দেওয়া সমাজে ভাতৃত্ববোধ ও সম্পর্কের দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে। ধনী হোক বা গরীব আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দান করা সুন্নত। 
 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য কোরবানির মাংস এক অংশ নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খাওয়া সুন্নাহ। হাদিসে আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও কোরবানির গোস্ত সংরক্ষণ করে পরে খেতেন। 

গরিব মিসকিনদের হক 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম গরিবদের হক আদায় করা কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য কেউ যদি কোরবানির সমস্ত মাংস নিজের কাছে রেখে দেন বা নিজের আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ করেন এবং গরিবদের না দেন তাহলে তা কোরবানির মূল উদ্দেশ্য পরিপূর্ণভাবে পালিত হয় না। তবে ফিকহের দৃষ্টিতে যদি কেউ নিজে সব খেয়ে ফেলেন বা আত্মীয়দের দান করেন তাহলে কুরবানী সহি হবে কিন্তু এটি সুন্নতের পরিপন্থী। এটি আলেমদের কএছ জেনে নিবেন।

কোরবানির মাংস বিক্রির বিধান 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম কোরবানির মাংস চামড়া বা এর কোন অংশ বিক্রি করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে যে ব্যাক্তি কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে তার কোন কুরবানী নেই (মুসনাদ আহমদ) চামড়া যদি বিক্রি করা হয় তাহলে সেই অর্থ গরিবদের দান করতে হবে। কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানীর কোন অংশ চামড়া, মাংস দেওয়া জায়েজ নয়। পারিশ্রমিক আলাদা করে অর্থ দিয়ে দিতে হবে। 

শহরে ও গ্রামে বন্টনের পার্থক্য 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম আজকের দিনের শহরে বসবাসরত অনেকে গরীবের হক পূরণের জন্য গ্রামের দরিদ্র এলাকায় কুরবানী করে থাকেন। যেখানে মাংস বন্টন করা সহজ ও অধিক হকদার ব্যক্তিদের মাঝে পৌঁচানো যায়। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্বেগ। শহরে অনেকেই কোরবানির গোশত কোল্ডস্টোরেজে জমিয়ে রাখেন বা আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ করেন ফলে প্রকৃত গরিবরা বঞ্চিত হন। তাই কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য মনে রেখে দরিদ্রদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা 

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম কোরবানির মাংস বন্টনের ক্ষেত্রে হিংসা অহংকার ও দেখনদারির মনোভাব রাখা যাবে না। বন্টন যেন মর্যাদা হানিকর না হয় গরিবদের সম্মান বজায় রেখে বিতরণ করা উচিত। মাংসের গুণগত মান বা পরিমানে ফাঁকি না দিয়ে যথাযথ ভাগ করে দেওয়া উচিত।
নিজ পরিবার ও আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণের সময় গরিব আত্মীয়দের আগে গুরুত্ব দেওয়া উত্তম। 

শেষ কথা

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম সঠিক নিয়ম কোরবানি কেবল একটি রীতি বা উৎসব নয় এটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এক মহান ত্যাগের প্রতীক। কোরবানির মাধ্যমে আমরা শুধু নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি না বরং সমাজে ন্যায় বিচার সহানুভূতি এবং মানবিকতা ছড়িয়ে দিই। কোরবানির মাংসের সঠিক বন্টনের মাধ্যমে সেই লক্ষ্যই পূরণ হয় তাই ইসলাম নির্দেশিত পদ্ধতিতে মাংস বন্টন করে আমরা কোরবানির পূর্ণ তাৎপর্য অর্জন করতে পারি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url